home about join contact

Sunday, July 3, 2011

আঁকান্তিসের অর্ধবছর!!



আইনস্টাইনের কথা ভুল প্রমাণ করে বেড়ে চলেছে সময়ের গতি! নইলে মাত্র তিন মাসের মত যেতে না যেতেই কিভাবে ছয়মাস হয়ে যায়? মানে আমাদের আঁকান্তিসের? জানুয়ারির এক তারিখ থেকে আঁকিবুকির তাগিদে আমরা ক'জন মিলে স্কেচ খাতা নিয়ে বেড়িয়ে পরতে শুরু করি ঢাকার বুকে। দেখতে দেখতে দলে দলে, পায়ে পায়ে, সিএনজিতে, রিক্সায় বাসে... অনেকে যোগ দিয়েছে(ন)। তাদের অনেকের আগ্রহ এমনকী উদ্যোক্তাদের থেকেও বেশী! অনেকেই আরো ঘন ঘন আঁকিবুকি করা যায় কি না জানতে চেয়েছেন। অনেকে আবার জানতে চেয়েছেন পাগলের সংখ্যা এত থাকবার পরেও কেন আমরা আবার তা বাড়তে চাইছি? যাই হোক, ছয় মাস দেখতে না দেখতে চলেই গেল। মনে হয় এবারে 'কেন এই আঁকান্তিস' তা আবার খোলাসা করবার সময় এসেছে। যদিও আমাদের এবাউট এ এই কথাটা আঁতলামীর মিষ্টি পাঁচনে  একবার বলা হয়েছে, এবার তাও টং দোকানীয় ভাষায় বলে নেয়াটা ভাল।



আঁকান্তিস কি?
আঁকান্তিস একটা আঁকিয়েদের আড্ডাখানা। এর শ্লোগান হল Let's Draw. এবং সে বিশ্বাস করে Anyone can draw. আঁকতে আগ্রহী যে কেউ এর অংশ হতে পারে(ন)। পেশাদার ও অপেশাদার আঁকিয়েরা মিলে এই আড্ডাখানা চালান। এটা সম্পূর্ণ অলাভজনক ও অপেশাদার একটি সংস্থা। আঁকান্তিস প্রতি সপ্তাহে ঢাকা শহরের কোন একটা জায়গা বেছে নিয়ে সেখানে স্কেচবুকিং করে। আগে সবাইকে একটা জায়গা আর সময়ের কথা বলে দেয়া হয় এস এম এস করে অথবা ফেইসবুকের গ্রুপ এ ইভেন্ট বানিয়ে। এরপর সবাই এক সাথে কয়েক ঘন্টা ধরে চলে আঁকিবুকি। সেই ইন্সট্যান্ট পথেঘাটে স্কেচ করবার নাম দেয়া হয়েছে স্কেচান্তিস। সব আঁকিয়েদের সেখানে আলাদা একাউন্ট আছে। তারা তাদের কাজ পরে সময়সুযোগ মত সেখানে তুলে দেন। এই আইডিয়াটা নেয়া হয়েছে কানাডার একটা আর্টিস্ট গ্রুপের ব্লগ থেকে। কনসেপ্ট আর্টিস্ট ববি চিউ কানাডায় এই ধরণের একটা গ্রুপ স্কেচিং করেন।

আঁকান্তিস কেন?
অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।  আসলে এই যুগে আমরা যারা নেট গুঁতিয়ে দিনের বিরাট একটা সময় পার করি, নিজের সম্পর্কে জানতেও গুগল এ সার্চ দেই তারা এদ্দিনে একটা ব্যপার বুঝে গেছি যে, 'আমাদের হয় না' আর 'ওরা' এত ভাল আঁকে যে আমরা তাদের ধারে কাছেও নাই। 'ওরা' একা একা কত কি কইরা ফেলে। ওদের আঁকা দেখে হাত কামরাতে ইচ্ছে করে। আর আমাদেরটা যেন সেই একই গন্ডীর মধ্যে পাক খেয়ে যাচ্ছে। নিজেদের ড্রইংরুমে বাহবা কুড়ানোর দিন চলে যাচ্ছে। এখন চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি আমাদের বয়সীরা অন্য দেশে বসে কত কি করে যাচ্ছে। আমরা পারি না কেন? এই পারি না কেন'র উত্তর খুঁজতে গিয়েই আসলে আঁকান্তিস এর জন্ম। আমরা একটু খোঁজ নিলেই দেখব যারা অসাধারণ কাজ করছে তারা দুইটা কারণে সেটা করতে পারছে, 
      • এক- তারা যা করে তা ভালমত 'বুঝে' করে।
      • দুই- তারা সেটা অনবরত করতেই থাকে।
আমরা সেই ৫০-৬০ বছর আগের ড্রয়িং এখনো করে যাচ্ছি। দুনিয়া যে কত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা যেন আমরা দেখেও না দেখার ভান করছি। আর আমাদের লার্নিং যেন হঠাৎ শেষ হয়ে যায়। মানে কোন আর্ট ইন্সটিউট আমাকে ডিগ্রি দিয়ে দিয়েছে মানে হল আর শিখবার কিছু নেই। অথবা কোন প্রকাশনায় আমার আঁকা ছাপা হয়েছে তো আমার আর শিখবার কিছু নেই। কারণ এতেই কাজ চলে যাচ্ছে। ড্রয়িং রুমে পিঠচাপড় পাচ্ছি, হালে ফেইসবুক এ পাচ্ছি 'লাইক'। সুতরাং আর চিন্তা কি? আঁকান্তিস চায় এখানে আঁকিবুকি নিয়ে যা করার তা বুঝে যেন করা হয়, এবং গ্রুপ স্কেচবুকিং এর টিম স্পিরিটটা যেন সবাই একসাথে ধারণ করা যায়। আপাততঃ এ-ই। এটাই যদি চলতে থাকে তবে আমরাও একদিন 'ওদের' মত হবই!


আঁকান্তিস এর উদ্যোক্তা কারা?
 আঁকান্তিসের উদ্যোক্তা আসলে কিছু পেশাদার ও অপেশাদার আঁকিয়েরা। তাদের অনেকেই ছাত্র, অনেকেই মূলধারায় কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের একটাই মিল যে তাঁরা নতুন ভিজুয়াল এ বিশ্বাস করেন। ক্লিশে বস্তাপঁচা ভিজুয়ালের ওপর দাঁড়িয়ে তারা আরেকটু সামনে তাকাতে চান। এবং তারা বিশ্বস করেন যে টিম ওয়ার্ক ছাড়া সেটা হবে না।

আঁকান্তিস এর পরবর্তী কাজ কী?
আপাতত আঁকান্তিস তার এই সপ্তাহান্তের গ্রুপ স্কেচিংটাকেই প্রাণরুপে দেখতে চাচ্ছে। চারদিক এক্সপ্লোরের সাথে সাথে অদূর ভবিষ্যতে কিছু প্রকাশনা (ড্রয়িং বুক, কমিক্স, চিলড্রেন বুক) করবার ইচ্ছে আছে তার। আর এ বছরের শেষ দিকে একটি আর্ট অয়ার্কশপ করবার আয়োজন চলছে।

 আঁকান্তিসের এই অর্ধবছর উপলক্ষে এর শতাধিক সদস্য ও শুভাকাংখীদের গভীর ভালোবাসা জানিয়ে এই লেখা এখানেই থামিয়ে দেয়া হল।

ধানমন্ডি ৫ এ, মার্চের দুপুরে, আঁকান্তিসের আড্ডায়

জানুয়ারি ২০১১ এ, ঢাকা নিউ মার্কেট চত্বর এ আঁকান্তিসের প্রথম স্টাডি। বাম থেকে, শামীম, সব্যসাচী মিস্ত্রি, তন্ময় ও মিতু


1 comment:

  1. Budget niye chillachilli korte korte mathata geche! Mhehedi Hq likhechen আঁকান্তিসের অর্ধবছর!! ar ami kina porchi Arthobochor???? ha ha ha.. shuvo jonmodin (Half, Bcoz 6 mnts)

    ReplyDelete